বকুল ফুলের গাছকে বলা যেতে পারে একটি মায়াবতী বৃক্ষ। তার ফুলের যে শুধু গন্ধে মায়া, বর্ণে মায়া তা নয়। তার পাতায় পাতায়ও একই বিনীত নিবেদন। রাতে ফুল ফোটে আর সারা রাত টুপটাপ ঝরে, ভোরে কিশোরী মালা গাঁথবে বলে। বকুল ফুল মাটিতে ঝড়ে পড়ার দৃশ্য নয়নাভিরাম। আবার ফুল ঝরলেও সে কখনো পাতা ঝরিয়ে উদোম হয় না, শুধু ক্লান্ত পথিককে একটু ছায়া দেওয়ার জন্য।
ভারি সুগন্ধি এই ফুল। বকুল ফুলের গন্ধ হয় মন উদাস করা। আবার অনেক বলে এর গন্ধ মিষ্টি মাদক গন্ধ। সৌভাগ্য বশত আমাদের কাউকে এর গন্ধকে পরিচয় করিয়ে দিতে হয় না।শুকনো ফুলের সুগন্ধটা অনেক দিন থাকে। কয়েকটি ফুল ঘরে রেখে দিলে মিষ্টি গন্ধে মো মো করে ওঠে চারদিক।
বকুল ফুলের আরেক নাম মধুপুষ্প। বৈজ্ঞানিক নাম Mimusops elengi হচ্ছে মিনাসপ Minasops প্রজাতির একটি ফুল। ইংরেজি নাম Spanish cherry, Medlar, and Bullet wood.
বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় এর গাছ পাওয়া যায়। এটি মাঝারি আকারের গাছ এবং এর পাতা গুলি হয় ঢেউ খেলানো। ফুল গুলো খুব বড় হয় না ছোট বড় জোড় ১ সেঃ মিঃ কিন্তু তারা সংখ্যায় হয় অগুনিতক। ছোট ছোট তারার মতো ফুল গুলো যখন ফোটে তখন গাছের চেহারা হয় অন্যরকম। এবং মাটি যখন ঝড়ে পড়ে তার দৃশ্য নয়নাভিরাম। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে বকুল ফুলের মালা গাঁথছে এটা গ্রাম বাংলার পরিচিত দৃশ্য।বকুল ছোট তারার মত হলুদাভ সাদা/ক্রীম রঙের মত এই ফুলটি বকুল। রাত্রে ফোটে এবং সারাদিন ধরে টুপটাপ ঝরতে থাকে। ভারি সুগন্ধী এই বকুল। শুকনো বকুল ফুলের সুগন্ধটা অনেকদিন থাকে তাই ফুলপ্রেমীরা এই ফুলের মালা অনেকদিন ঘরে রেখে দেয়। শীত কাল ছাড়া সারা বছরই ফুল ফো্টে ফুল ঝরে।সাধারনত বসন্ত কালে প্রস্ফুটিত হয়।
শুকনো বকুল ফুলের গুঁড়া নাক দিয়ে নিঃশ্বাসের সাথে টেনে নিলে মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। বকুল গাছের ছাল দিয়ে কাটা ছেঁড়ার ক্ষত পরিষ্কার করা যায়। এছাড়াও বকুল গাছের ছাল ও তেঁতুল গাছের ছাল সিদ্ধ করে পাচনের মাধ্যমে তৈরি তরল ঔষধ ত্বকের নানারকম রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়।