হলুদ করবী ফুল চিরহরিৎ গুল্ম। কাঁটাহীন করবী ফুল দেখতে দূর থেকে অনেকটা গোলাপের মতো লাগে। করবী নানা রঙের হয়। লাল, গোলাপী, সাদা- তবে লাল ও সাদাই দেখা যায় বেশি। ছোট ছোট ফুলগুলি গুচ্ছবদ্ধ হয়ে ফোটে। করবী ফুলে বিশেষ কোন গন্ধ থাকে না । হলুদ কালার করবি ফুলও ইদানিং দেখা যায়, তবে সেটা খুব কম চোখে পরে। পাঁপড়ির রকমফের অনুসারে করবী ফুল দু’রকমের হয়ে থাকে, যথা—সিঙ্গল পেটাল এবং ডাবল পেটাল বা থোকা।
করবীকে ইংরেজিতে Sweet-Scented Oleander, Indian Oleander বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nerium indicum , এটি Apocynaceae পরিবারভুক্ত। Nerium শব্দটি এসেছে গ্রীক nerion বা Olender থেকে। Indicum শব্দের অর্থ India। অর্থাৎ করবী আমাদের উপমহাদেশেরই ফুল। করবী গাছ মাঝারি ঝোপের আকারে হয়। এর পাতগুলি সরু ও বল্লমাকার।
করবী একটি চিরহরিৎ ঝোপ জাতীয় গাছ। উচ্চতা সর্বোচ্চ ৭-৮ ফুট। মাটি থেকে সরাসরি উঠে আসা কয়েকটি সরলাকৃতি শাখায় সরু পাতা ও ফুল দেখা দেয়। ফুল সুদৃশ্য ও হালকা সুগন্ধযুক্ত। বীজ ধূসর বর্ণের ও লোমে আবৃত। গাছ সাধারণত গোড়া থেকে ওঠা অনেকগুলো ডালের একটি ঝোপ তৈরি করে। ডালের উপরের দিকে পাতা থাকে আর থাকে পাঁচ পাপড়ির ফুল।
গোলাপী রঙের ফুলগুলি যখন গাছে হয়ে থাকে থোকা থোকা অবস্থায়। গোলাপি রঙের করবী ফুলের ডাবল ফুলের জাত আছে, একে বলে পদ্মকরবী। পদ্মকরবীর পাপড়ি অনেকগুলো, দেখতেও সুন্দর।
শ্বেতকরবী ইত্যাদি বিখ্যাত। সুন্দর দেখতে ও অত্যন্ত রুক্ষ পরিবেশে বাড়তে পারে বলে বহু জায়গায় সাজবার জন্য এটি চাষ করা হয়। কিন্তু গাছটির সর্বঙ্গ তীব্র বিষযুক্ত। একটি মাত্র পাতা খেলেই মানুষের, বিশেষত শিশুর মৃত্যু হতে পারে। পাতা তেতো বলে মানুষের ক্ষেত্রে বিষক্রিয়া কম দেখা যায়।
এই গাছে সাধারণত প্রায় সারা বছর ফুল ফোটে। তবে বেশি ফোটে বসন্ত ও গ্রীষ্ম ঋতুতে। তবে আজকাল অন্য সময়েও এই ফুল ফুটতে দেখা যায়। শীতে এই গাছ ফুল দেয় না। কিছু ব্যতিক্রমী গাছ হয়তো সামান্য ফুল দেয়। মোট কথা, শীতকাল এই গাছের ঘুমের সময়। জাগে ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের শুরুতে।
করবী ভূমধ্যসাগরীয় ও এশীয় প্রজাতি। এরা ২-২.৫ মিটার উঁচু। এরা চিরসবুজ গাছ। গোড়া থেকে অনেকগুলো ডাল ঝোপের মত গজায়। পাতা ডালের আগার দিকে বেশি। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় ফুল। কলমে চাষ, ছাঁটা নিষ্প্রয়োজন। এদের বীজ বিষাক্ত।
করবী ফুলের গুনাগুণ
অকালে চুল পাকা কমাতে করবীর মূলের ছাল উপকারী।
খোস-পাঁচড়া সারাতে এর মূল তিল বা নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মাখতে হবে।
ব্রণ কমাতে মূলের ছাল উপকারী।